ঢাকা ০৩:৫০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএনপি নেতার কাছে চাঁদা চাইলেন যুবদল নেতা

রাজশাহীতে এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে বিএনপির এক নেতার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নগরীর রাজপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ ও কলরেকর্ড থেকে জানা গেছে, বিএনপি নেতা মইফুল ইসলাম চাঁদা দিতে না চাইলে যুবদল নেতা মোফাজ্জল হোসেন শুভ ওরফে কুরুল তাকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, তোকে যেখানে পাব, সেখানেই কুপিয়ে মারব।

অভিযুক্ত মোফাজ্জল রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আর মইফুল ইসলাম শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। হুমকির পর বিএনপি নেতা মইফুল ইসলাম নগরীর রাজপাড়া থানায় যুবদল নেতা মোফাজ্জল ও তার ক্যাডার বাহিনীর ছয় সদস্যের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ঘটনার পর থেকে বিএনপি নেতা মইফুল সতর্কভাবে চলাফেরা করছেন বলে জানিয়েছেন। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে আমার মোবাইলে মোফাজ্জল কল দেন। আমি কল রিসিভ করতেই মোফাজ্জল আমার অবস্থান জানতে চান এবং গালাগালি শুরু করেন। এরপর তিনি বলেন, “তোকে যেখানে পাব, সেখানেই কুপিয়ে মারব। তুই কোথায় আছিস বল?”—এসব কথাবার্তা শুনে আমি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলি।

অভিযোগে বিএনপি নেতা মইফুল আরও বলেন, এর পর থেকে মোফাজ্জল আমাকে বারবার কল দিতে থাকেন। একপর্যায়ে মোফাজ্জল ও তার বাহিনীর ক্যাডাররা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ে গিয়ে আমাকে খুঁজতে থাকেন। আমাকে না পেয়ে এ সময় দলীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। সেখানে উপস্থিত দুজন কর্মী আমাকে ফোন দিয়ে এ সময় দলীয় কার্যালয়ে যেতে নিষেধ করেন। এরপর কার্যালয়ের পাশেই আমার বাড়ির সামনে গিয়ে তারা গালাগালি করেন। এ সময় আমার স্ত্রী বের হলে তাকে বলেন—প্রাণে বাঁচতে হলে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে।

অভিযুক্ত যুবদল নেতা মোফাজ্জল বলেন, মইফুল ইয়াবা বিক্রি করেন। এলাকার পরিবেশ তিনি নষ্ট করছেন। তাই তাকে শুধু মাদক কারবার ছাড়তে বলা হয়েছে। চাঁদা দাবি করা হয়নি। মাদক কারবার ছাড়তে বলার কারণে তিনি মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন।

মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রবি বলেন, বিএনপি নেতা মইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। মোফাজ্জলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, সেটি ভিত্তিহীন।

বিএনপি নেতা মইফুল ইসলাম বলেন, এলাকায় মোফাজ্জল ও তার বাহিনী বেপরোয়া। মামলা-বাণিজ্য, তেরখাদিয়া বাজার ও এলাকার নির্মাণাধীন ভবনে চাঁদাবাজি এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য মানুষকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এর আগেও গত ডিসেম্বরে মোফাজ্জল ও তার বাহিনী আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। ২৬ সেপ্টেম্বর আবারও কুপিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার পর আমার ওপর বড় ধরনের হামলার আশঙ্কায় রয়েছি। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এ কারণে আমি সতর্কভাবে চলাফেরা করছি। বিষয়টি আমি দলের হাইকমান্ডের কাছে লিখিতভাবে জানিয়ে প্রতিকার চাইব।

এ ব্যাপারে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার গাজিউর রহমান বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুমকিতে সাংবাদিক দেলোয়ারকে হুমকি; প্রেসক্লাবের তীব্র প্রতিবাদ

বিএনপি নেতার কাছে চাঁদা চাইলেন যুবদল নেতা

আপডেট সময় ০৮:০১:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫

রাজশাহীতে এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে বিএনপির এক নেতার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নগরীর রাজপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ ও কলরেকর্ড থেকে জানা গেছে, বিএনপি নেতা মইফুল ইসলাম চাঁদা দিতে না চাইলে যুবদল নেতা মোফাজ্জল হোসেন শুভ ওরফে কুরুল তাকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, তোকে যেখানে পাব, সেখানেই কুপিয়ে মারব।

অভিযুক্ত মোফাজ্জল রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আর মইফুল ইসলাম শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। হুমকির পর বিএনপি নেতা মইফুল ইসলাম নগরীর রাজপাড়া থানায় যুবদল নেতা মোফাজ্জল ও তার ক্যাডার বাহিনীর ছয় সদস্যের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ঘটনার পর থেকে বিএনপি নেতা মইফুল সতর্কভাবে চলাফেরা করছেন বলে জানিয়েছেন। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে আমার মোবাইলে মোফাজ্জল কল দেন। আমি কল রিসিভ করতেই মোফাজ্জল আমার অবস্থান জানতে চান এবং গালাগালি শুরু করেন। এরপর তিনি বলেন, “তোকে যেখানে পাব, সেখানেই কুপিয়ে মারব। তুই কোথায় আছিস বল?”—এসব কথাবার্তা শুনে আমি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলি।

অভিযোগে বিএনপি নেতা মইফুল আরও বলেন, এর পর থেকে মোফাজ্জল আমাকে বারবার কল দিতে থাকেন। একপর্যায়ে মোফাজ্জল ও তার বাহিনীর ক্যাডাররা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয়ে গিয়ে আমাকে খুঁজতে থাকেন। আমাকে না পেয়ে এ সময় দলীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। সেখানে উপস্থিত দুজন কর্মী আমাকে ফোন দিয়ে এ সময় দলীয় কার্যালয়ে যেতে নিষেধ করেন। এরপর কার্যালয়ের পাশেই আমার বাড়ির সামনে গিয়ে তারা গালাগালি করেন। এ সময় আমার স্ত্রী বের হলে তাকে বলেন—প্রাণে বাঁচতে হলে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে।

অভিযুক্ত যুবদল নেতা মোফাজ্জল বলেন, মইফুল ইয়াবা বিক্রি করেন। এলাকার পরিবেশ তিনি নষ্ট করছেন। তাই তাকে শুধু মাদক কারবার ছাড়তে বলা হয়েছে। চাঁদা দাবি করা হয়নি। মাদক কারবার ছাড়তে বলার কারণে তিনি মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন।

মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রবি বলেন, বিএনপি নেতা মইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। মোফাজ্জলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, সেটি ভিত্তিহীন।

বিএনপি নেতা মইফুল ইসলাম বলেন, এলাকায় মোফাজ্জল ও তার বাহিনী বেপরোয়া। মামলা-বাণিজ্য, তেরখাদিয়া বাজার ও এলাকার নির্মাণাধীন ভবনে চাঁদাবাজি এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য মানুষকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এর আগেও গত ডিসেম্বরে মোফাজ্জল ও তার বাহিনী আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। ২৬ সেপ্টেম্বর আবারও কুপিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার পর আমার ওপর বড় ধরনের হামলার আশঙ্কায় রয়েছি। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এ কারণে আমি সতর্কভাবে চলাফেরা করছি। বিষয়টি আমি দলের হাইকমান্ডের কাছে লিখিতভাবে জানিয়ে প্রতিকার চাইব।

এ ব্যাপারে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার গাজিউর রহমান বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।