ঢাকা ০১:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সেপটিক ট্যাংক থেকে ছয় বছরের শিশুর মরদেহ উদ্ধার, যুবক আটক  Logo জুলুস হবে জামেয়া থেকে জিইসি মোড় পর্যন্ত রোডম্যাপ ঘোষণা Logo তিন দফা দাবিতে চট্টগ্রামে চুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo চট্টগ্রাম বাকলিয়ায় পর্যটন কেন্দ্র গড়তে চায় চসিক Logo ভুয়া ডাক্তারকে জরিমানা, ডেন্টাল প্রতিষ্ঠানে সিলগালা Logo উখিয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সরওয়ার সভাপতি ও সোলতান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত Logo উখিয়ায় চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের বিক্ষোভে পুলিশের লাঠিচার্জ, আটক ১০ Logo রোহিঙ্গাদের স্থায়ী সমাধান খুঁজছে বাংলাদেশ Logo দাঁড়িপাল্লার বিজয়কে ত্বরান্বিত করতে শ্রমিক প্রতিনিধিদের অগ্রনী ভূমিকা রাখতে হবে:শামসুল আলম বাহাদুর Logo ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা ব্যবস্থাই প্রকৃত শিক্ষা ব্যবস্থা : মঞ্জুরুল ইসলাম।

প্রধান উপদেষ্টার কাছে দ্বিতীয় ইন্টেরিম রিপোর্ট জমা দিল গুম সংক্রান্ত কমিশন

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দ্বিতীয় ইন্টেরিম রিপোর্ট জমা দিয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্তকমিশন।

আজ বুধবার বেলা ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশন প্রধান বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।

সদস্যদের মধ্যে নূর খান, সাজ্জাদ হোসেন এবং নাবিলা ইদ্রিস উপস্থিত ছিলেন।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া।

প্রতিবেদন জমার পর প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রতিবেদনটি ওয়েবসাইট ও বই আকারে প্রকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। এটি ঘিরে শুধু বাংলাদেশ নয়, বৈশ্বিকভাবেও আগ্রহ রয়েছে।

‘কী ভয়াবহ একেকটি ঘটনা! আমাদের সমাজের “ভদ্রলোকেরা” আমাদেরই আত্মীয়-পরিজনরা এই ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে। আপনারা যা যা কিছু পেয়েছেন তার ভিত্তিতে একটি হরর মিউজিয়াম হওয়া উচিত। গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা। এই ধরনের বন্দিশালা কেমন হয়, তিন ফিট বাই তিন ফিট খুপড়ির মধ্যে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আটকে থাকার যে নির্মমতা, নিষ্ঠুরতার চিত্র মানুষের কাছে তুলে ধরা উচিত, বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

এসময় তিনি কমিশন সদস্যদের কাছে প্রতিবেদনের আশু করণীয়গুলো চিহ্নিত করে কোনটি কোন মন্ত্রণালয়ের আওতায় পড়ছে তা সুনির্দিষ্ট করে দেওয়ার নির্দেশনা দেন যাতে করে সরকার স্বল্পসময়ের মধ্যে কাজগুলো শুরু করতে পারে।

একজন কমিশন সদস্য প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘ঘটনাগুলো এতটাই ভয়াবহ যে জড়িত অনেক কর্মকর্তা ও অন্যান্যরাও অনুশোচনায় ভোগেন। তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আত্মশুদ্ধির একটা প্রচেষ্টা হিসেবে। দুজন অফিসার লিখিতভাবে এর থেকে পরিত্রাণ চেয়ে চিঠিও লিখেছিলেন। চিঠিগুলো গণভবনে পাওয়া গেছে। তৎকালীন সেনাপ্রধান জনসম্মুখে এই চিঠির কথা স্বীকারও করেছেন।

কমিশন সদস‍্যরা জানান, কমিশনের কাছে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ এসেছে এবং তারমধ্যে ১ হাজার ৩৫০টি অভিযোগ যাচাই বাছাই শেষ হয়েছে।

কমিশন সদস‍্যরা আরো জানান, অভিযোগের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

গুমের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে এখনো তিনশতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জানান তারা।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার যাতে অন্তত ব‍্যাংক হিসেবে লেনদেন করতে পারে সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান কমিশন প্রধান।

তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনে কেউ সাত বছর নিখোঁজ থাকলে তাকে মৃত বলে ধরে নেয়ার সুযোগ রয়েছে। আইন সংশোধন করে এটিকে পাঁচ বছর করার সুপারিশ করেন তিনি।

অতিদ্রুত যাতে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া যায়, সে বিষয়ে করণীয় জানাতে কমিশনকে পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

কমিশন সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনারা ভয়-ভীতি, নানান রকম হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছেন। এদেশের মানুষের জন্য আপনারা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন। ভবিষ্যতে যারা মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করবে আপনারা তাদের অনুপ্রেরণা।

জনপ্রিয় সংবাদ

সেপটিক ট্যাংক থেকে ছয় বছরের শিশুর মরদেহ উদ্ধার, যুবক আটক 

প্রধান উপদেষ্টার কাছে দ্বিতীয় ইন্টেরিম রিপোর্ট জমা দিল গুম সংক্রান্ত কমিশন

আপডেট সময় ০৯:২২:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দ্বিতীয় ইন্টেরিম রিপোর্ট জমা দিয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্তকমিশন।

আজ বুধবার বেলা ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশন প্রধান বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।

সদস্যদের মধ্যে নূর খান, সাজ্জাদ হোসেন এবং নাবিলা ইদ্রিস উপস্থিত ছিলেন।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া।

প্রতিবেদন জমার পর প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রতিবেদনটি ওয়েবসাইট ও বই আকারে প্রকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। এটি ঘিরে শুধু বাংলাদেশ নয়, বৈশ্বিকভাবেও আগ্রহ রয়েছে।

‘কী ভয়াবহ একেকটি ঘটনা! আমাদের সমাজের “ভদ্রলোকেরা” আমাদেরই আত্মীয়-পরিজনরা এই ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে। আপনারা যা যা কিছু পেয়েছেন তার ভিত্তিতে একটি হরর মিউজিয়াম হওয়া উচিত। গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা। এই ধরনের বন্দিশালা কেমন হয়, তিন ফিট বাই তিন ফিট খুপড়ির মধ্যে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আটকে থাকার যে নির্মমতা, নিষ্ঠুরতার চিত্র মানুষের কাছে তুলে ধরা উচিত, বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

এসময় তিনি কমিশন সদস্যদের কাছে প্রতিবেদনের আশু করণীয়গুলো চিহ্নিত করে কোনটি কোন মন্ত্রণালয়ের আওতায় পড়ছে তা সুনির্দিষ্ট করে দেওয়ার নির্দেশনা দেন যাতে করে সরকার স্বল্পসময়ের মধ্যে কাজগুলো শুরু করতে পারে।

একজন কমিশন সদস্য প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘ঘটনাগুলো এতটাই ভয়াবহ যে জড়িত অনেক কর্মকর্তা ও অন্যান্যরাও অনুশোচনায় ভোগেন। তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আত্মশুদ্ধির একটা প্রচেষ্টা হিসেবে। দুজন অফিসার লিখিতভাবে এর থেকে পরিত্রাণ চেয়ে চিঠিও লিখেছিলেন। চিঠিগুলো গণভবনে পাওয়া গেছে। তৎকালীন সেনাপ্রধান জনসম্মুখে এই চিঠির কথা স্বীকারও করেছেন।

কমিশন সদস‍্যরা জানান, কমিশনের কাছে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ এসেছে এবং তারমধ্যে ১ হাজার ৩৫০টি অভিযোগ যাচাই বাছাই শেষ হয়েছে।

কমিশন সদস‍্যরা আরো জানান, অভিযোগের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

গুমের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে এখনো তিনশতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জানান তারা।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার যাতে অন্তত ব‍্যাংক হিসেবে লেনদেন করতে পারে সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান কমিশন প্রধান।

তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনে কেউ সাত বছর নিখোঁজ থাকলে তাকে মৃত বলে ধরে নেয়ার সুযোগ রয়েছে। আইন সংশোধন করে এটিকে পাঁচ বছর করার সুপারিশ করেন তিনি।

অতিদ্রুত যাতে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া যায়, সে বিষয়ে করণীয় জানাতে কমিশনকে পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

কমিশন সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনারা ভয়-ভীতি, নানান রকম হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছেন। এদেশের মানুষের জন্য আপনারা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন। ভবিষ্যতে যারা মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করবে আপনারা তাদের অনুপ্রেরণা।