ঢাকা ০৫:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

গুরুত্বপূর্ণ পদেই এখনো স্বৈরাচারের ডিসিরা

  • মরজান আহমদ
  • আপডেট সময় ০৯:৫৬:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা, ডিজিএফআই-এনএসআই ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দিয়ে প্রার্থীর রাজনৈতিক মতাদর্শ যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয় শেখ হাসিনার সরকার।

গত ১৬ বছরে সারা দেশে ৩৩০ জন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয় শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকার। এসব নিয়োগের প্রধান যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল কর্মকর্তার রাজনৈতিক মতাদর্শ। ছাত্রজীবনে যারা ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন অথবা নিজেদের আওয়ামী মতাদর্শের সমর্থক প্রমাণ করতে পেরেছেন শুধু তাদেরকেই জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগের জন্য বিবেচনা করা হয়েছিল। তাদের এই রাজনৈতিক মতাদর্শ কয়েক স্তরে তদন্ত করা হয়েছে। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা, ডিজিএফআই-এনএসআই ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দিয়ে প্রার্থীর রাজনৈতিক মতাদর্শ যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয় শেখ হাসিনার সরকার।

স্বৈরাচারীর শাসনামলে নিয়োগ পাওয়া এ কর্মকর্তাদের মধ্যে বিতর্কিত তিনটি নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৪৫ জনকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) এবং ২১ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় অন্তর্বর্তী সরকার। বাকি আড়াই শতাধিক কর্মকর্তা এখনো বহাল রয়েছেন। এর মধ্যে শতাধিক কর্মকর্তা সচিবালয়ের ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে কিছু কিছু ডিসির প্রত্যক্ষ মদদে, যারা ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের কর্মী অথবা সরকারের বিভিন্ন সময়ে সুবিধাভোগী। ইতোমধ্যে আবার কেউ কেউ বিএনপি-জামায়াত নেতাদের সাথে যোগাযোগ রেখে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকার চেষ্টা করছেন। সেই সাথে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পলাতক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে নিয়মিতভাবে যোগাযোগ রেখে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাদের জানিয়ে দিচ্ছেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জামালপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক ইমরান আহমেদ আছেন উপসচিব হিসেবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে, শেরপুরের সাবেক ডিসি আব্দুল্লাহ আল খায়রুম উপসচিব হিসেবে আছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক খালিদ হোসেন উপসচিব হিসেবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম উপসচিব হিসেবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে, চাঁদপুরের সাবেক ডিসি কামরুল হাসান উপসচিব হিসেবে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে, হবিগঞ্জের সাবেক ডিসি দেবী চন্দ উপসচিব হিসেবে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, রংপুরের সাবেক ডিসি ড. চিত্রলেখা নাজনীন রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (যুগ্মসচিব) হিসেবে, যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আরবাউল হাছান মজুমদার উপসচিব হিসেবে বহাল আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে, নরসিংদীর জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান উপসচিব হিসেবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টার একান্ত সচিব হিসেবে, গাইবান্ধার সাবেক ডিসি মো: অলিউর রহমান যুগ্মসচিব হিসেবে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগে, শেরপুরের সাবেক ডিসি সাহেলা আক্তার যুগ্মসচিব হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয়ে, মানিকগঞ্জের সাবেক ডিসি মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ উপসচিব হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয়ে, চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান উপসচিব হিসেবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে, পটুয়াখালীর সাবেক ডিসি মোহাম্মদ কামাল হোসেন উপসচিব হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে, বরিশালের সাবেক ডিসি মো: জাহাঙ্গীর হোসেন যুগ্মসচিব হিসেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে, জামালপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক বেগম মোর্শেদা জামান যুগ্মসচিব হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে, মাদারীপুরের সাবেক ডিসি রহিমা খাতুন যুগ্মসচিব হিসেবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে, বাগেরহাটের সাবেক ডিসি মোহাম্মদ আজিজুর রহমান যুগ্মসচিব হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, রাঙ্গামাটির সাবেক ডিসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান যুগ্মসচিব হিসেবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে, লক্ষ্মীপুরের সাবেক ডিসি আনোয়ার হোসাইন আকন্দ যুগ্মসচিব হিসেবে স্বাস্থ্য ও সেবা বিভাগে, বগুড়ার সাবেক ডিসি মো: জিয়াউল হক যুগ্মসচিব হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে, কুষ্টিয়ার সাবেক ডিসি মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম যুগ্মসচিব হিসেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে, কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি মো: রেজাউল করিম যুগ্মসচিব হিসেবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, নোয়াখালীর সাবেক ডিসি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম যুগ্মসচিব হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে, যশোরের সাবেক ডিসি মো: তমিজুল ইসলাম খান যুগ্মসচিব হিসেবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, ঢাকার সাবেক ডিসি মোহাম্মদ মমিনুর রহমান যুগ্মসচিব হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, রংপুরের সাবেক ডিসি মো: আসিব আহসান যুগ্মসচিব হিসেবে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে, ফরিদপুরের সাবেক ডিসি অতুল সরকার যুগ্মসচিব হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, রাজবাড়ীর সাবেক ডিসি দিলসাদ বেগম যুগ্মসচিব হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয়ে, খাগড়াছড়ির সাবেক ডিসি প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস যুগ্মসচিব হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয়ে, পঞ্চগড়ের সাবেক ডিসি ড. সাবিনা ইয়াসমিন যুগ্মসচিব হিসেবে কৃষি মন্ত্রণালয়ে, কক্সবাজারের সাবেক ডিসি মো: মামুনুর রশীদ যুগ্মসচিব হিসেবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে, ময়মনসিংহের সাবেক ডিসি মোহাম্মদ এনামুল হক যুগ্মসচিব হিসেবে কৃষি মন্ত্রণালয়ে, পঞ্চগড়ের সাবেক ডিসি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম যুগ্মসচিব হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয়ে, নীলফামারীর সাবেক ডিসি মো: হাফিজুর রহমান চৌধুরী যুগ্মসচিব হিসেবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে, দিনাজপুরের সাবেক ডিসি ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর যুগ্মসচিব হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার একান্ত সচিব হিসেবে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক এ জেড এম নুরুল হক যুগ্মসচিব হিসেবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে, সাতক্ষীরার সাবেক ডিসি মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন যুগ্মসচিব হিসেবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্ত বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, বগুড়ার সাবেক ডিসি মোহাম্মদ নুরে আলম সিদ্দিকী অতিরিক্ত সচিব হিসেবে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে, নড়াইলের সাবেক ডিসি মো: এমদাদুল হক চৌধুরী ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে বরগুনার সাবেক ডিসি মো: মোখলেছুর রহমান পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে লক্ষ্মীপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক হোমায়রা বেগম অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে জয়পুরহাটের সাবেক ডিসি মো: মোকাম্মেল হক দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক ডিসি রেজওয়ানুর রহমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে চুয়াডাঙ্গার সাবেক ডিসি জিয়াউদ্দীন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে লালমনিরহাটের সাবেক ডিসি আবুল ফয়েজ মো: আলাউদ্দিন খান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে, কিশোরগঞ্জের সাবেক ডিসি মো: আজিমুদ্দিন বিশ্বাস আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে, সুনামগঞ্জের সাবেক ডিসি ও ঢাকার সাবেক বিভাগীয় কমিশনার মো: সাবিরুল ইসলাম ভূমি আপিল বোর্ডের সদস্য হিসেবে, রাঙ্গামাটির সাবেক ডিসি মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে, চুয়াডাঙ্গার সাবেক ডিসি সায়মা ইউনুস ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে, মেহেরপুরের সাবেক ডিসি পরিমল সিংহ বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের মহাপরিচালক হিসেবে, রাজশাহীর সাবেক জেলা প্রশাসক ও খুলনার সাবেক বিভাগীয় কমিশনার হেলাল মাহমুদ শরীফ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক ডিসি মো: মাহমুদুল হাসান স্থানীয় সরকার বিভাগের মহাপরিচালক হিসেবে, মেহেরপুরের সাবেক ডিসি শফিকুল ইসলাম রেশম বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে, খাগড়াছড়ির সাবেক ডিসি মো: রাশিদুল ইসলাম বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে, নোয়াখালী ও ঝিনাইদহের সাবেক ডিসি মাহবুব আলম তালুকদার চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য হিসেবে, কুষ্টিয়ার সাবেক ডিসি মো: জহির রায়হান জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে, পঞ্চগড়ের সাবেক ডিসি অমল কৃষ্ণ মণ্ডল আছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে, বরিশালের সাবেক ডিসি ড. গাজী মো: সাইফুজ্জামান যুব উন্নয়ন অধিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে, মাদারীপুরের সাবেক ডিসি কামাল উদ্দীন বিশ্বাস সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে, যশোরের সাবেক ডিসি মো: আশরাফ উদ্দিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে, খুলনার সাবেক ডিসি আমিন উল আহসান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে, বরগুনার সাবেক ডিসি ড. মহা: বশিরুল আলম যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক হিসেবে, শরীয়তপুরের সাবেক ডিসি মো: মাহমুদুল হোসাইন খান প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব হিসেবে সংযুক্ত রয়েছেন।

সূত্র ; নয়া দিগন্ত

মাদকাসক্তরা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে

গুরুত্বপূর্ণ পদেই এখনো স্বৈরাচারের ডিসিরা

আপডেট সময় ০৯:৫৬:২৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা, ডিজিএফআই-এনএসআই ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দিয়ে প্রার্থীর রাজনৈতিক মতাদর্শ যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয় শেখ হাসিনার সরকার।

গত ১৬ বছরে সারা দেশে ৩৩০ জন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয় শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকার। এসব নিয়োগের প্রধান যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল কর্মকর্তার রাজনৈতিক মতাদর্শ। ছাত্রজীবনে যারা ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন অথবা নিজেদের আওয়ামী মতাদর্শের সমর্থক প্রমাণ করতে পেরেছেন শুধু তাদেরকেই জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগের জন্য বিবেচনা করা হয়েছিল। তাদের এই রাজনৈতিক মতাদর্শ কয়েক স্তরে তদন্ত করা হয়েছে। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা, ডিজিএফআই-এনএসআই ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দিয়ে প্রার্থীর রাজনৈতিক মতাদর্শ যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেয় শেখ হাসিনার সরকার।

স্বৈরাচারীর শাসনামলে নিয়োগ পাওয়া এ কর্মকর্তাদের মধ্যে বিতর্কিত তিনটি নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৪৫ জনকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) এবং ২১ জনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় অন্তর্বর্তী সরকার। বাকি আড়াই শতাধিক কর্মকর্তা এখনো বহাল রয়েছেন। এর মধ্যে শতাধিক কর্মকর্তা সচিবালয়ের ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে কিছু কিছু ডিসির প্রত্যক্ষ মদদে, যারা ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের কর্মী অথবা সরকারের বিভিন্ন সময়ে সুবিধাভোগী। ইতোমধ্যে আবার কেউ কেউ বিএনপি-জামায়াত নেতাদের সাথে যোগাযোগ রেখে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকার চেষ্টা করছেন। সেই সাথে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পলাতক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে নিয়মিতভাবে যোগাযোগ রেখে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাদের জানিয়ে দিচ্ছেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জামালপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক ইমরান আহমেদ আছেন উপসচিব হিসেবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে, শেরপুরের সাবেক ডিসি আব্দুল্লাহ আল খায়রুম উপসচিব হিসেবে আছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক খালিদ হোসেন উপসচিব হিসেবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম উপসচিব হিসেবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে, চাঁদপুরের সাবেক ডিসি কামরুল হাসান উপসচিব হিসেবে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে, হবিগঞ্জের সাবেক ডিসি দেবী চন্দ উপসচিব হিসেবে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, রংপুরের সাবেক ডিসি ড. চিত্রলেখা নাজনীন রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (যুগ্মসচিব) হিসেবে, যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আরবাউল হাছান মজুমদার উপসচিব হিসেবে বহাল আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে, নরসিংদীর জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান উপসচিব হিসেবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টার একান্ত সচিব হিসেবে, গাইবান্ধার সাবেক ডিসি মো: অলিউর রহমান যুগ্মসচিব হিসেবে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগে, শেরপুরের সাবেক ডিসি সাহেলা আক্তার যুগ্মসচিব হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয়ে, মানিকগঞ্জের সাবেক ডিসি মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ উপসচিব হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয়ে, চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান উপসচিব হিসেবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে, পটুয়াখালীর সাবেক ডিসি মোহাম্মদ কামাল হোসেন উপসচিব হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে, বরিশালের সাবেক ডিসি মো: জাহাঙ্গীর হোসেন যুগ্মসচিব হিসেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে, জামালপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক বেগম মোর্শেদা জামান যুগ্মসচিব হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে, মাদারীপুরের সাবেক ডিসি রহিমা খাতুন যুগ্মসচিব হিসেবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে, বাগেরহাটের সাবেক ডিসি মোহাম্মদ আজিজুর রহমান যুগ্মসচিব হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, রাঙ্গামাটির সাবেক ডিসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান যুগ্মসচিব হিসেবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে, লক্ষ্মীপুরের সাবেক ডিসি আনোয়ার হোসাইন আকন্দ যুগ্মসচিব হিসেবে স্বাস্থ্য ও সেবা বিভাগে, বগুড়ার সাবেক ডিসি মো: জিয়াউল হক যুগ্মসচিব হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে, কুষ্টিয়ার সাবেক ডিসি মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম যুগ্মসচিব হিসেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে, কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি মো: রেজাউল করিম যুগ্মসচিব হিসেবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, নোয়াখালীর সাবেক ডিসি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম যুগ্মসচিব হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে, যশোরের সাবেক ডিসি মো: তমিজুল ইসলাম খান যুগ্মসচিব হিসেবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, ঢাকার সাবেক ডিসি মোহাম্মদ মমিনুর রহমান যুগ্মসচিব হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, রংপুরের সাবেক ডিসি মো: আসিব আহসান যুগ্মসচিব হিসেবে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে, ফরিদপুরের সাবেক ডিসি অতুল সরকার যুগ্মসচিব হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, রাজবাড়ীর সাবেক ডিসি দিলসাদ বেগম যুগ্মসচিব হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয়ে, খাগড়াছড়ির সাবেক ডিসি প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস যুগ্মসচিব হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয়ে, পঞ্চগড়ের সাবেক ডিসি ড. সাবিনা ইয়াসমিন যুগ্মসচিব হিসেবে কৃষি মন্ত্রণালয়ে, কক্সবাজারের সাবেক ডিসি মো: মামুনুর রশীদ যুগ্মসচিব হিসেবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে, ময়মনসিংহের সাবেক ডিসি মোহাম্মদ এনামুল হক যুগ্মসচিব হিসেবে কৃষি মন্ত্রণালয়ে, পঞ্চগড়ের সাবেক ডিসি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম যুগ্মসচিব হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয়ে, নীলফামারীর সাবেক ডিসি মো: হাফিজুর রহমান চৌধুরী যুগ্মসচিব হিসেবে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে, দিনাজপুরের সাবেক ডিসি ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর যুগ্মসচিব হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার একান্ত সচিব হিসেবে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক এ জেড এম নুরুল হক যুগ্মসচিব হিসেবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে, সাতক্ষীরার সাবেক ডিসি মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন যুগ্মসচিব হিসেবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্ত বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে, বগুড়ার সাবেক ডিসি মোহাম্মদ নুরে আলম সিদ্দিকী অতিরিক্ত সচিব হিসেবে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে, নড়াইলের সাবেক ডিসি মো: এমদাদুল হক চৌধুরী ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে বরগুনার সাবেক ডিসি মো: মোখলেছুর রহমান পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে লক্ষ্মীপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক হোমায়রা বেগম অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে জয়পুরহাটের সাবেক ডিসি মো: মোকাম্মেল হক দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক ডিসি রেজওয়ানুর রহমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে চুয়াডাঙ্গার সাবেক ডিসি জিয়াউদ্দীন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে লালমনিরহাটের সাবেক ডিসি আবুল ফয়েজ মো: আলাউদ্দিন খান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে, কিশোরগঞ্জের সাবেক ডিসি মো: আজিমুদ্দিন বিশ্বাস আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে, সুনামগঞ্জের সাবেক ডিসি ও ঢাকার সাবেক বিভাগীয় কমিশনার মো: সাবিরুল ইসলাম ভূমি আপিল বোর্ডের সদস্য হিসেবে, রাঙ্গামাটির সাবেক ডিসি মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে, চুয়াডাঙ্গার সাবেক ডিসি সায়মা ইউনুস ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে, মেহেরপুরের সাবেক ডিসি পরিমল সিংহ বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের মহাপরিচালক হিসেবে, রাজশাহীর সাবেক জেলা প্রশাসক ও খুলনার সাবেক বিভাগীয় কমিশনার হেলাল মাহমুদ শরীফ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক ডিসি মো: মাহমুদুল হাসান স্থানীয় সরকার বিভাগের মহাপরিচালক হিসেবে, মেহেরপুরের সাবেক ডিসি শফিকুল ইসলাম রেশম বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে, খাগড়াছড়ির সাবেক ডিসি মো: রাশিদুল ইসলাম বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে, নোয়াখালী ও ঝিনাইদহের সাবেক ডিসি মাহবুব আলম তালুকদার চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য হিসেবে, কুষ্টিয়ার সাবেক ডিসি মো: জহির রায়হান জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে, পঞ্চগড়ের সাবেক ডিসি অমল কৃষ্ণ মণ্ডল আছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে, বরিশালের সাবেক ডিসি ড. গাজী মো: সাইফুজ্জামান যুব উন্নয়ন অধিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে, মাদারীপুরের সাবেক ডিসি কামাল উদ্দীন বিশ্বাস সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে, যশোরের সাবেক ডিসি মো: আশরাফ উদ্দিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে, খুলনার সাবেক ডিসি আমিন উল আহসান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে, বরগুনার সাবেক ডিসি ড. মহা: বশিরুল আলম যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক হিসেবে, শরীয়তপুরের সাবেক ডিসি মো: মাহমুদুল হোসাইন খান প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব হিসেবে সংযুক্ত রয়েছেন।

সূত্র ; নয়া দিগন্ত