গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যা মামলায় প্রধান আসামিসহ মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ, বাসন থানা পুলিশ এবং র্যাব। শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া বিভিন্ন অভিযানে তারা গাজীপুর মহানগর ও জেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ডঃ. নাজমুল করিম খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছেন। বিএনপি কমিশনারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে গাজীপুরে শতাধিক প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন জামালপুরের মেলান্দহ থানার মাহমুদপুর গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে মো. মিজান ওরফে কেটু মিজান (৩৪), যিনি বর্তমানে মহানগরের বাসন মেট্রো থানার চান্দনা এলাকায় বসবাস করতেন, এবং তার স্ত্রী জামালপুরের মেলান্দহ থানার ফেরিঘাট গ্রামের মোঃ সোলাইমানের মেয়ে পারুল আক্তার ওরফে গোলাপি (২৮), এদের দুজনকে গাজীপুর জেলাধীন জয়দেবপুর থানার ভবানীপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাবনার ফরিদপুর থানার সোনাহারা গ্রামের মৃত নূর মোহাম্মদের ছেলে মো. স্বাধীন (২৮) যাকে র্যাব সদর মেট্রো থানাধীন শিববাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। খুলনা মহানগরের সোনাডাঙ্গা থানার ময়লাপোতা গ্রামের মোহাম্মদ হানিফ মিয়ার ছেলে মো. আল আমিন (২১), যিনি বর্তমানে গাজীপুর সদর মেট্রো থানা দিন সাধুপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন, তাকে ডিএমপি তুরাগ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কুমিল্লার হোমনা থানার অনন্তপুর গ্রামের মোঃ হানিফ ভূঁইয়ার ছেলে মো. শাহজালাল (৩২) যাকে ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানাধীন চর মসশলন্দ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাবনার চাটমোহর থানার পাচবাড়ীয়া গ্রামের কিয়ামউদ্দিন হাসানের ছেলে মো. ফয়সাল হাসান (২৩), যিনি গাজীপুর মেট্রো বাসন থানাধীন চান্না এলাকার রফিকুল ইসলামের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন, তাকে চান্না এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শেরপুর জেলার নকলা থানার চিতলিয়া গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে সুমন ওরফে সাব্বির (২৬) তাকে বাসন থানাধীন চান্দনা, চান্না এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। নিহত মো. আসাদুজ্জামান তুহিন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ভিডিও ধারণের সময় তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. সেলিম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা করেছেন।
গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে একটি রামদা, একটি ব্যাব স্টিক এবং তিনটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। এসব অস্ত্র দিয়ে মোট ১২টি মামলার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
বর্তমানে তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুততার সঙ্গে অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে।