পশু কুরবানিকে আল্লাহ ওয়াজিব করেছেন, দ্বীন কায়েমের জন্য জান ও মাল কুরবানিকে আল্লাহ ফরজ করেছেন ত্যাগের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে শোষণমুক্ত ও তাকওয়া ভিত্তিক সমাজ গঠনের আহ্বান জানিয়ে, পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে পালংখালী ইউনিয়নসহ দেশবাসী ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পালংখালী ইউনিয়নে আমীর আবুল আলা রোমান এবং সেক্রেটারী আব্দুর রহমান।
যৌথ শুভেচ্ছা বার্তায় নেতৃবৃন্দ বলেন, পশু কুরবানিকে আল্লাহ ওয়াজিব করেছেন, দ্বীন কায়েমের জন্য জান ও মাল কুরবানিকে আল্লাহ ফরজ করেছেন। প্রতিবারের মতো ত্যাগ ও কুরবানির প্রেরণা নিয়ে পবিত্র ঈদুল আযহা আমাদের মাঝে সমাগত। এই ঈদ শুধুমাত্র ত্যাগের চেতনাকেই উজ্জীবিত করে না, সেই সাথে সমাজে অনৈক্য ভুলে গিয়ে পরস্পরের ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধনকে আরো মজবুত করে। মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম (আ.) আল্লাহর রাহে ত্যাগ ও কুরবানির মহাপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ফলে তাঁর স্মৃতিকে চিরস্মরণীয় করে জীবনের সকল ক্ষেত্রে ঈমানী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার জন্যেই আল্লাহ তা’য়ালা মুসলিম মিল্লাতের উপর কিয়ামত পর্যন্ত এ কুরবানীকে ওয়াজিব করে দিয়েছেন। যাতে প্রতিটি মুসলমান তার নফসের উপর বিজয়ী হয়ে নিজের প্রিয় বস্তু, ধন-সম্পদ, চিন্তা-চেতনা আল্লাহর রাহে কুরবানী করে দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা অর্জন করতে পারে। কুরবানীর মূল শিক্ষাই হলো নিজের অহংবোধকে বিসর্জন দেওয়া এবং সেই সাথে আল্লাহর দেওয়া বিধি-নিষেধ পালন করে পরিপূর্ণ ত্বাকওয়াবান মুমিন হওয়া। পশু কুরবানির মতোই ইক্বামতে দ্বীন প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে। ইক্কামতে দ্বীন বলতে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইসলামের ফরজ বিধানগুলো প্রতিষ্ঠা করা এবং তা মেনে চলা। ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান– এতে রয়েছে রাজনীতি, সমাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, পারিবারিক জীবন–বিধান, কিসাস, হুদুদ, ন্যায়বিচার ইত্যাদি। জীবনের এমন কোন দিক নেই–যেখানে ইসলামের বিধি–বিধান, অনুশাসন নেই। সবকিছু নিয়েই পূর্ণাঙ্গ দ্বীন বা পূর্ণাঙ্গ ইসলাম। ইক্বামতে দ্বীন শুধুমাত্র কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ্ব ও যাকাতকে বোঝায় না। এটির চূড়ান্ত রূপ ও পরিপূর্ণ বিকাশ হচ্ছে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ইসলামী অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করা, কোরআনের বিধান প্রবর্তন করা। তাই নতুন বাংলাদেশে ইকামতে দ্বীন প্রতিষ্ঠায় দলমত-ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে পালংখালী ইউনিয়নসহ দেশবাসীর প্রতি নেতৃবৃন্দ আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, পালংখালী ইউনিয়নসহ দেশবাসী এবার এমন একটি সময়ে ঈদুল আযহা উদযাপন করতে যাচ্ছে যখন আওয়ামী অপশাসনের পতনের পর দেশের মানুষ নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে। সেই স্বপ্ন পূরণে সবাইকে জনগণের প্রত্যাশার পক্ষে দাঁড়ানো অত্যাবশ্যক। ছাত্র-জনতার জীবন ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশের সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিত না করেই কেবল নির্বাচন হলে জনগণের প্রত্যাশা পূরন হবে না। বরং পরাজিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের চেয়েও ভয়াবহ ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে। সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি বন্ধ করে এবং আধিপাত্যবাদের সঙ্গ ছেড়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়তে নেতৃবৃন্দ সব দল ও মতের প্রতি আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, পবিত্র কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেছেন- “বলুন, আমার নামায, আমার কুরবাণী এবং আমার জীবন ও মরণ বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে”। তাই ঈদুল আযহা আমাদেরকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য লাভের সুযোগ করে দেয়। আমরা যদি বাস্তব জীবনে ইসলামী আদর্শ অনূসরণ করে সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ কায়েম করতে পারি, তাহলেই কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব হবে। নেতৃবৃন্দ হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে শোষণমুক্ত সমাজ গঠনে নগরবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সেই সাথে নেতৃবৃন্দ আবারো পালংখালী ইউনিয়নসহ দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহর প্রতি পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানান এবং সবাইকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রেখে স্বাস্থ্য সচেতনতার সাথে যথাযথ মর্যাদায় ঈদুল আযহা উদযাপন করার আহ্বান জানান।