ঢাকা ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পরীক্ষিত দলকেই নির্বাচনে বেছে নেবে জনগণ : মির্জা ফখরুল Logo রাজধানীতে আগাম শীতবস্ত্র কম্বল বিতরণ করেছে এশিয়া ছিন্নমূল মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশন Logo মিয়ানমার সীমান্তে মধ্য রাতে গোলাগুলি, এপারে গুলিবিদ্ধ রোহিঙ্গা যুবক Logo শহিদুল আলমকে তুরস্কের সহযোগিতায় ফিরিয়ে আনা হবে: প্রেস উইং Logo ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের সাথে বিএনপির বৈঠক Logo শহীদ জিয়ার মাজার জিয়ারত করে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া Logo রোহিঙ্গা যুবকের হাতে বাংলাদেশী এনআইডি, কাজ করছেন সরকারি অধিদপ্তরে? Logo শেরপুরে মানব পাচারকালে ২৬ জন আটক Logo প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফর অত্যন্ত সফল Logo সামনে পূর্ণিমার পূর্ণ চাঁদ দেখা যাচ্ছে : আমির খসরু

গাজার আকাশে জ্বলন্ত তারা: অনির্বাণ মানবতার প্রতিধ্বনি ও ভাঙ্গা স্বপ্নের সন্ধ্যাভাষা

  • এম.এ হাসেম
  • আপডেট সময় ০৩:০৯:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • ৩৮৫ বার পড়া হয়েছে

ফাইল ছবি


গাজা—একটি নাম, যার প্রতিটি অক্ষরে জমে আছে শতাব্দীর কান্না। এখানে সূর্য অস্ত যায় না, শুধু রক্তের আভায় ডুবে যায় প্রতিদিন। মরুভূমির বালি যেখানে শুষে নেয় মায়েদের শেষ প্রার্থনা, আর সমুদ্রের ঢেউ ভেসে আনে শরণার্থীদের অসমাপ্ত গল্পের টুকরো। গাজা কেবল একটি ভূখণ্ড নয়, এটি এক জীবন্ত মহাকাব্য। যেখানে প্রতিটি ধূলিকণা যুদ্ধের গন্ধে ভারী, আর রাতের নিশ্বাসে মিশে থাকে ভাঙ্গা ঘরের ফাটল থেকে ছড়ানো শিশুর হাসি।

 

এই মাটির নিচে শিকড় গজায় না গাছের, গজায় প্রতিরোধের বীজ। যুদ্ধের গর্জনে থরথর করে কাঁপে বাড়ির দেয়াল, কিন্তু ফিলিস্তিনি দাদীর হাতের তাজা মাখলুফার গন্ধে উথাল-পাথাল হয় স্মৃতির সমুদ্র। গাজা সেই জায়গা, যেখানে সময় থমকে যায় বোমার বিস্ফোরণে, আবার জেগে ওঠে এক টুকরো রুটি ভাগ করে নেওয়ার নীরব সংকল্পে।

কবি মুরিদ বারঘুতির কলমে লেখা হয়নি এখানকার ইতিহাস—লেখা হয়েছে পাথুরে জমিনে লাল সিরিয়ালের দাগ দিয়ে, যুবকের রক্তে আঁকা গ্রাফিতিতে, আর মায়ের চোখের জলে ভেজা কুরআনের পাতায়। গাজার আকাশে উড়ে বেড়ানো প্যারাগ্লাইডার গুলো শান্তির দূত নয়, তারা যেন ভাঙা স্বপ্নের কালো পতাকা। তবুও, এই ধ্বংসস্তূপের মাঝেই ফুটে থাকে জাফরানের ফুল—একটি মেয়ে যার স্কুল ব্যাগে আছে গণিতের বই আর ভাইয়ের শোকে বিবর্ণ এক টুকরো ক্যানভাস।

গাজা আমাদের জিজ্ঞাসা করে “মানবতা কি শুধুই ভূগোলের মানচিত্রে সীমানা টানার খেলা? নাকি তা জমে থাকে একটি মায়ের হাতের তাপে, যে হাত আজও তন্দুর রুটি বানায়, যদিও চুলার নিচে পড়ে আছে তার সন্তানের ডায়েরির পাতা?” এই ভূমিকা কোনো উত্তর দেবে না—বরং খুলে দেবে এক ঝুলি প্রশ্ন, যার প্রতিটির ওজন পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন জয়ের গল্পের চেয়েও ভারী।

ঐতিহাসিক পটভূমি: শিকড়ের সন্ধানে ১. ১৯৪৮-এর নকবা (বিপর্যয়): ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য ১৯৪৮ সালের যুদ্ধ মানবিক বিপর্যয়ের সূচনা। ৭ লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুতে পরিণত হন, যা আজও গাজার শরণার্থী শিবির গুলোর জন্ম দাতা।

২. ১৯৬৭ সালের যুদ্ধ: গাজা ইসরাইলের দখলে যায়। সামরিক শাসন, ভূমি জবরদখল ও অর্থনৈতিক অবরোধের সূত্রপাত।

৩. ২০০৬-২০০৭ হামাসের উত্থান: ফিলিস্তিনি নির্বাচনে হামাসের বিজয়ের পর গাজায় ইসরাইল-মিসরের সমন্বিত অবরোধ শুরু হয়। বন্দর, বিমানবন্দর বন্ধ; জ্বালানি, ওষুধ, খাদ্য সরবরাহ হ্রাস—গাজার অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ে।

৪. যুদ্ধের চক্র : ২০০৮-২০০৯ (অপারেশন কাস্ট লেড), ২০১৪ (৫১ দিনের যুদ্ধ), ২০২১ (শেখ জারারা সংঘাত) এবং ২০২৩-এ চলমান সংঘাত—প্রতিবারই হাজারো প্রাণহানি, বাড়িঘর ধ্বংস, শিশুদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঢাকা পড়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতি : সংখ্যার অন্তরালে মানবিক সঙ্কট জনসংখ্যা ও ভূগোল: ৩৬৫ বর্গকিলোমিটারে (বাংলাদেশের কোনো জেলার সমান) বসবাস ২৩ লক্ষ মানুষের। বিশ্বের সর্বোচ্চ জনঘনত্বের এই অঞ্চলে ৭৫% শরণার্থী।

-অবরোধের প্রভাব : বিশ্বব্যাংকের মতে, গাজার ৫৩% বেকার (যুবকদের মধ্যে ৭০%)। ৮০% জনগণ মানবিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল।

-স্বাস্থ্যব্যবস্থা : (ডাব্লিউএসও)-এর তথ্যমতে, ২০২৩-এ যুদ্ধের সময় ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে ১৫টি অকার্যকর। ক্যান্সার ও কিডনি রোগীরা নিয়মিত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত।

-শিশুদের ভবিষ্যৎ : ইউনিসেফ-এর প্রতিবেদনে, গাজার ৫ লক্ষ শিশু মানসিক আঘাতে ভুগছে। স্কুলগুলোতে হামলা, বিদ্যুৎ সংকটে পড়াশোনা অসম্ভব।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা: নীরবতা ও দ্বিচারিতা‍-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র : বছরে ৩.৮ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা ইসরাইলকে দেয়। ইউএন-ভেটো দিয়ে সংঘাতের তদন্ত বাধা দেয়।

-ইউরোপীয় ইউনিয়ন : দ্বিমুখী নীতি—একদিকে মানবাধিকারের কথা বলেন, অন্যদিকে ইসরাইলি পণ্য বয়কটের বিরোধিতা।

-আরব দেশগুলো : ২০২০-এর নর্মালাইজেশন চুক্তি (ইমারাত, বাহরাইন) ফিলিস্তিন ইস্যুকে প্রান্তিক করে তুলেছে।

-আন্তর্জাতিক আদালত (আইসিসি) : ২০২১-এ যুদ্ধাপরাধ তদন্ত শুরু হলেও রাজনৈতিক চাপে অগ্রগতি সীমিত।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা : আলোর সন্ধান ১.দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান : ১৯৬৭-এর সীমানায় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনই একমাত্র স্থায়ী সমাধান। তবে ইসরাইলি বসতি সম্প্রসারণ (পশ্চিম তীরে ৭ লক্ষ বসতি স্থাপনকারী) ও হামাস-ফাতাহ বিভক্তি বাধা।

২.মানবিক অবরোধ প্রত্যাহার : গাজার অর্থনৈতিক পুনর্গঠন, সমুদ্রবন্দর খোলা ও চলাচলের স্বাধীনতা জরুরি। মিসর-ইসরাইলের সঙ্গে চুক্তি প্রয়োজন।

৩.তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা : সামাজিক মাধ্যমের যুগে ফিলিস্তিনি যুবকেরা বিশ্বজনমত তৈরি করতে সক্ষম। বদরুন নাসের, মোহাম্মদ এল-কুর্দের মতো সক্রিয়তাবাদীদের কণ্ঠ এখন গ্লোবাল সাউথে প্রতিধ্বনিত।

৪.নাগরিক সমাজের জোট : ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনি শান্তিকর্মীদের সংগঠন (যেমন “কম্ব্যাটেন্টস ফর পিস”) সংলাপের মঞ্চ তৈরি করতে পারে।

মানবতার জয় হোক গাজার সংঘাত কেবল ভূ-রাজনীতির খেলা নয়—এটি মানবিকতার পরীক্ষা। যখন একটি শিশু ভাঙ্গা স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে বলে, “আমি বাঁচতে চাই,” তখন তা সমগ্র বিশ্বের বিবেককে জাগ্রত করে। ইতিহাস সাক্ষী, অস্ত্রের ঝনঝনানিতে শান্তি আসে না। প্রয়োজন ন্যায়বিচার, সম্মান ও সহাবস্থানের রাজনীতি। গাজার আকাশে যখনই বৃষ্টি নামে, রক্তের দাগ ধুয়ে যায়। কিন্তু সেই বৃষ্টি যেন অশ্রু নয়, আশার বার্তা বয়ে আনে।

ট্যাগস :

পরীক্ষিত দলকেই নির্বাচনে বেছে নেবে জনগণ : মির্জা ফখরুল

গাজার আকাশে জ্বলন্ত তারা: অনির্বাণ মানবতার প্রতিধ্বনি ও ভাঙ্গা স্বপ্নের সন্ধ্যাভাষা

আপডেট সময় ০৩:০৯:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

ফাইল ছবি


গাজা—একটি নাম, যার প্রতিটি অক্ষরে জমে আছে শতাব্দীর কান্না। এখানে সূর্য অস্ত যায় না, শুধু রক্তের আভায় ডুবে যায় প্রতিদিন। মরুভূমির বালি যেখানে শুষে নেয় মায়েদের শেষ প্রার্থনা, আর সমুদ্রের ঢেউ ভেসে আনে শরণার্থীদের অসমাপ্ত গল্পের টুকরো। গাজা কেবল একটি ভূখণ্ড নয়, এটি এক জীবন্ত মহাকাব্য। যেখানে প্রতিটি ধূলিকণা যুদ্ধের গন্ধে ভারী, আর রাতের নিশ্বাসে মিশে থাকে ভাঙ্গা ঘরের ফাটল থেকে ছড়ানো শিশুর হাসি।

 

এই মাটির নিচে শিকড় গজায় না গাছের, গজায় প্রতিরোধের বীজ। যুদ্ধের গর্জনে থরথর করে কাঁপে বাড়ির দেয়াল, কিন্তু ফিলিস্তিনি দাদীর হাতের তাজা মাখলুফার গন্ধে উথাল-পাথাল হয় স্মৃতির সমুদ্র। গাজা সেই জায়গা, যেখানে সময় থমকে যায় বোমার বিস্ফোরণে, আবার জেগে ওঠে এক টুকরো রুটি ভাগ করে নেওয়ার নীরব সংকল্পে।

কবি মুরিদ বারঘুতির কলমে লেখা হয়নি এখানকার ইতিহাস—লেখা হয়েছে পাথুরে জমিনে লাল সিরিয়ালের দাগ দিয়ে, যুবকের রক্তে আঁকা গ্রাফিতিতে, আর মায়ের চোখের জলে ভেজা কুরআনের পাতায়। গাজার আকাশে উড়ে বেড়ানো প্যারাগ্লাইডার গুলো শান্তির দূত নয়, তারা যেন ভাঙা স্বপ্নের কালো পতাকা। তবুও, এই ধ্বংসস্তূপের মাঝেই ফুটে থাকে জাফরানের ফুল—একটি মেয়ে যার স্কুল ব্যাগে আছে গণিতের বই আর ভাইয়ের শোকে বিবর্ণ এক টুকরো ক্যানভাস।

গাজা আমাদের জিজ্ঞাসা করে “মানবতা কি শুধুই ভূগোলের মানচিত্রে সীমানা টানার খেলা? নাকি তা জমে থাকে একটি মায়ের হাতের তাপে, যে হাত আজও তন্দুর রুটি বানায়, যদিও চুলার নিচে পড়ে আছে তার সন্তানের ডায়েরির পাতা?” এই ভূমিকা কোনো উত্তর দেবে না—বরং খুলে দেবে এক ঝুলি প্রশ্ন, যার প্রতিটির ওজন পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন জয়ের গল্পের চেয়েও ভারী।

ঐতিহাসিক পটভূমি: শিকড়ের সন্ধানে ১. ১৯৪৮-এর নকবা (বিপর্যয়): ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য ১৯৪৮ সালের যুদ্ধ মানবিক বিপর্যয়ের সূচনা। ৭ লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুতে পরিণত হন, যা আজও গাজার শরণার্থী শিবির গুলোর জন্ম দাতা।

২. ১৯৬৭ সালের যুদ্ধ: গাজা ইসরাইলের দখলে যায়। সামরিক শাসন, ভূমি জবরদখল ও অর্থনৈতিক অবরোধের সূত্রপাত।

৩. ২০০৬-২০০৭ হামাসের উত্থান: ফিলিস্তিনি নির্বাচনে হামাসের বিজয়ের পর গাজায় ইসরাইল-মিসরের সমন্বিত অবরোধ শুরু হয়। বন্দর, বিমানবন্দর বন্ধ; জ্বালানি, ওষুধ, খাদ্য সরবরাহ হ্রাস—গাজার অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ে।

৪. যুদ্ধের চক্র : ২০০৮-২০০৯ (অপারেশন কাস্ট লেড), ২০১৪ (৫১ দিনের যুদ্ধ), ২০২১ (শেখ জারারা সংঘাত) এবং ২০২৩-এ চলমান সংঘাত—প্রতিবারই হাজারো প্রাণহানি, বাড়িঘর ধ্বংস, শিশুদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঢাকা পড়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতি : সংখ্যার অন্তরালে মানবিক সঙ্কট জনসংখ্যা ও ভূগোল: ৩৬৫ বর্গকিলোমিটারে (বাংলাদেশের কোনো জেলার সমান) বসবাস ২৩ লক্ষ মানুষের। বিশ্বের সর্বোচ্চ জনঘনত্বের এই অঞ্চলে ৭৫% শরণার্থী।

-অবরোধের প্রভাব : বিশ্বব্যাংকের মতে, গাজার ৫৩% বেকার (যুবকদের মধ্যে ৭০%)। ৮০% জনগণ মানবিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল।

-স্বাস্থ্যব্যবস্থা : (ডাব্লিউএসও)-এর তথ্যমতে, ২০২৩-এ যুদ্ধের সময় ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে ১৫টি অকার্যকর। ক্যান্সার ও কিডনি রোগীরা নিয়মিত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত।

-শিশুদের ভবিষ্যৎ : ইউনিসেফ-এর প্রতিবেদনে, গাজার ৫ লক্ষ শিশু মানসিক আঘাতে ভুগছে। স্কুলগুলোতে হামলা, বিদ্যুৎ সংকটে পড়াশোনা অসম্ভব।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা: নীরবতা ও দ্বিচারিতা‍-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র : বছরে ৩.৮ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা ইসরাইলকে দেয়। ইউএন-ভেটো দিয়ে সংঘাতের তদন্ত বাধা দেয়।

-ইউরোপীয় ইউনিয়ন : দ্বিমুখী নীতি—একদিকে মানবাধিকারের কথা বলেন, অন্যদিকে ইসরাইলি পণ্য বয়কটের বিরোধিতা।

-আরব দেশগুলো : ২০২০-এর নর্মালাইজেশন চুক্তি (ইমারাত, বাহরাইন) ফিলিস্তিন ইস্যুকে প্রান্তিক করে তুলেছে।

-আন্তর্জাতিক আদালত (আইসিসি) : ২০২১-এ যুদ্ধাপরাধ তদন্ত শুরু হলেও রাজনৈতিক চাপে অগ্রগতি সীমিত।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা : আলোর সন্ধান ১.দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান : ১৯৬৭-এর সীমানায় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনই একমাত্র স্থায়ী সমাধান। তবে ইসরাইলি বসতি সম্প্রসারণ (পশ্চিম তীরে ৭ লক্ষ বসতি স্থাপনকারী) ও হামাস-ফাতাহ বিভক্তি বাধা।

২.মানবিক অবরোধ প্রত্যাহার : গাজার অর্থনৈতিক পুনর্গঠন, সমুদ্রবন্দর খোলা ও চলাচলের স্বাধীনতা জরুরি। মিসর-ইসরাইলের সঙ্গে চুক্তি প্রয়োজন।

৩.তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা : সামাজিক মাধ্যমের যুগে ফিলিস্তিনি যুবকেরা বিশ্বজনমত তৈরি করতে সক্ষম। বদরুন নাসের, মোহাম্মদ এল-কুর্দের মতো সক্রিয়তাবাদীদের কণ্ঠ এখন গ্লোবাল সাউথে প্রতিধ্বনিত।

৪.নাগরিক সমাজের জোট : ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনি শান্তিকর্মীদের সংগঠন (যেমন “কম্ব্যাটেন্টস ফর পিস”) সংলাপের মঞ্চ তৈরি করতে পারে।

মানবতার জয় হোক গাজার সংঘাত কেবল ভূ-রাজনীতির খেলা নয়—এটি মানবিকতার পরীক্ষা। যখন একটি শিশু ভাঙ্গা স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে বলে, “আমি বাঁচতে চাই,” তখন তা সমগ্র বিশ্বের বিবেককে জাগ্রত করে। ইতিহাস সাক্ষী, অস্ত্রের ঝনঝনানিতে শান্তি আসে না। প্রয়োজন ন্যায়বিচার, সম্মান ও সহাবস্থানের রাজনীতি। গাজার আকাশে যখনই বৃষ্টি নামে, রক্তের দাগ ধুয়ে যায়। কিন্তু সেই বৃষ্টি যেন অশ্রু নয়, আশার বার্তা বয়ে আনে।