ঢাকা ০১:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo এনসিপির মঞ্চ ভাঙচুর পরে সমাবেশ শুরু Logo হামলায় আহত বিএনপি নেতার মৃত্যু Logo ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যা: মাহিন ও রবিন রিমান্ডে Logo নির্বাচনে বোঝা যাবে কারা দুই-তিনটা সিট পাবে, দেশছাড়া হবে: দুদু Logo দূষণবিরোধী অভিযানে ছয় মাসে প্রায় সাড়ে ২৫ কোটি টাকা জরিমানা Logo চকরিয়ায় মার্কেট উচ্ছেদ অভিযান : কোটি টাকার সরকারি জমি উদ্ধার Logo কক্সবাজার হলিডে মোড় থেকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার Logo জামায়াতের সঙ্গে জোট বাদ দিয়ে এনসিপির জন্য দরজা খোলা: সালাহউদ্দিন আহমেদ Logo চট্টগ্রাম বোর্ড: পাশের হার ৭২ দশমিক ০৭ শতাংশ Logo কুমিল্লায় বুড়িচং মোকাম বড় বাড়ীর রাস্তা বন্ধ করে জনচলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে

নরসিংদীতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কলা চাষ

‘কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত’-এই খনার বচনটি যেন নরসিংদীর কলা চাষীদের মধ্যে ব্যাপক সারা জাগিয়েছে। কলা চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় নরসিংদী জেলার কৃষকদের মধ্যে বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কলার চাষ।

নরসিংদী জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই কলা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা, সদর, পলাশ, শিবপুর, মনোহরদী, বেলাব ও শিবপুর উপজেলার অধিকাংশ কৃষক কলা চাষের দিকে ঝুকে পড়েছে। এখানকার অনেক পরিবার কেবল কলা চাষ করেই স্বাবলম্বী হয়েছে।

কৃষকরা জানিয়েছেন, অন্য যে কোনো ফসলের চেয়ে অনেক বেশি লাভ হয় কলা চাষে। বিশেষ করে এখানকার যোগাযোগ অবস্থা ভাল থাকায় নরসিংদী জেলায় বেশ কয়েকটি বাজারে কলার বিস্ময়কর বাজার সৃষ্টি হয়েছে। নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার চরনগরদী, চরসিন্দুর ও কালিবাজার বেলাব উপজেলার বেলাব বাজার, রায়পুরা উপজেলার রাধাগঞ্জ বাজার, শিবপুর উপজেলার শিবপুর বাজার ও সিএন্ডবি বাজার, মনোহরদী উপজেলার হাতিরদিয়া বাজার, চালাকচর বাজার, মনোহরদী বাজার, সদর উপজেলার রেলগেইট বাজারে কলা বিক্রি করা হচ্ছে।

কৃষকরা আরো জানিয়েছেন, তুলনামূলকভাবে অন্যান্য ফসলের চেয়ে কলার দামও বেশি। সাধারণত বৈশাখ মাসে কলার চারা রোপন করলে অগ্রহায়ণ মাস থেকে ফল পাওয়া শুরু হয়। যেসব জমিতে বর্ষার পানি সাধারণত এক সপ্তাহের বেশি থাকে না সেসব জমিতে কলার চাষ ভাল হয়।

একবিঘা জমিতে কলার জাত ভেদে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ কলার চারা রোপন করা হয়ে থাকে। এক বিঘা জমিতে কলা চাষ করতে ১৫/২০ হাজার টাকা খরচ পড়লেও প্রতি বিঘা জমি থেকে কলা বিক্রি হয় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। যা অন্য কোনো ফসলে সম্ভব নয়।

নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, নরসিংদী জেলায় চলতি বছরে ৬৯০ হেক্টর জমিতে কলার চাষ করা হয়েছে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০ হাজার মেট্রিক টন।

শিবপুর উপজেলার কলা চাষি কামাল হোসেন জানিয়েছেন, তিনি এবার ৫ বিঘা জমিতে কলার চাষ করেছেন। খরচ বাদে প্রতি বিঘায় ৭০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হয়েছে।

হাতিরদিয়া গ্রামের কলা চাষী স্বপন আহমেদ বলেছেন, ‘কলা বিক্রিতে কোনো ঝামেলা নেই। বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে জমি থেকেই কলা কেটে নিয়ে যায়। এ ছাড়াও হাতিদিয়া বাজহারে কলার বিশাল হাট বসে বৃহস্পতিবার ও রোববার।

নরসিংদীর কলা উন্নত মানের হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামে নরসিংদীর কলার বড় মার্কেট বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নরসিংদী জেলায় উৎপাদিত কলার মধ্যে রয়েছে ওষুধি কলা হিসেবে চিহ্নিত চাম্পা কলা, সবরি কলা, সাগর কলা, হোমাই কলা ও গেরাসুন্দর।

বর্তমানে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে সবরি কলা প্রতি ছড়া প্রকার ভেদে ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত, সাগর কলা ২৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা, চাম্বা কলা ১৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, হোমাই কলা ৩০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আজিজুর রহমান বলেছেন, ‘কলা চাষ বেশ লাভজনক ফসল। তাই কলা চাষ করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন।’

এনসিপির মঞ্চ ভাঙচুর পরে সমাবেশ শুরু

নরসিংদীতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কলা চাষ

আপডেট সময় ০৯:৩৩:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

‘কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত’-এই খনার বচনটি যেন নরসিংদীর কলা চাষীদের মধ্যে ব্যাপক সারা জাগিয়েছে। কলা চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় নরসিংদী জেলার কৃষকদের মধ্যে বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কলার চাষ।

নরসিংদী জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই কলা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা, সদর, পলাশ, শিবপুর, মনোহরদী, বেলাব ও শিবপুর উপজেলার অধিকাংশ কৃষক কলা চাষের দিকে ঝুকে পড়েছে। এখানকার অনেক পরিবার কেবল কলা চাষ করেই স্বাবলম্বী হয়েছে।

কৃষকরা জানিয়েছেন, অন্য যে কোনো ফসলের চেয়ে অনেক বেশি লাভ হয় কলা চাষে। বিশেষ করে এখানকার যোগাযোগ অবস্থা ভাল থাকায় নরসিংদী জেলায় বেশ কয়েকটি বাজারে কলার বিস্ময়কর বাজার সৃষ্টি হয়েছে। নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার চরনগরদী, চরসিন্দুর ও কালিবাজার বেলাব উপজেলার বেলাব বাজার, রায়পুরা উপজেলার রাধাগঞ্জ বাজার, শিবপুর উপজেলার শিবপুর বাজার ও সিএন্ডবি বাজার, মনোহরদী উপজেলার হাতিরদিয়া বাজার, চালাকচর বাজার, মনোহরদী বাজার, সদর উপজেলার রেলগেইট বাজারে কলা বিক্রি করা হচ্ছে।

কৃষকরা আরো জানিয়েছেন, তুলনামূলকভাবে অন্যান্য ফসলের চেয়ে কলার দামও বেশি। সাধারণত বৈশাখ মাসে কলার চারা রোপন করলে অগ্রহায়ণ মাস থেকে ফল পাওয়া শুরু হয়। যেসব জমিতে বর্ষার পানি সাধারণত এক সপ্তাহের বেশি থাকে না সেসব জমিতে কলার চাষ ভাল হয়।

একবিঘা জমিতে কলার জাত ভেদে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ কলার চারা রোপন করা হয়ে থাকে। এক বিঘা জমিতে কলা চাষ করতে ১৫/২০ হাজার টাকা খরচ পড়লেও প্রতি বিঘা জমি থেকে কলা বিক্রি হয় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। যা অন্য কোনো ফসলে সম্ভব নয়।

নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, নরসিংদী জেলায় চলতি বছরে ৬৯০ হেক্টর জমিতে কলার চাষ করা হয়েছে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০ হাজার মেট্রিক টন।

শিবপুর উপজেলার কলা চাষি কামাল হোসেন জানিয়েছেন, তিনি এবার ৫ বিঘা জমিতে কলার চাষ করেছেন। খরচ বাদে প্রতি বিঘায় ৭০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হয়েছে।

হাতিরদিয়া গ্রামের কলা চাষী স্বপন আহমেদ বলেছেন, ‘কলা বিক্রিতে কোনো ঝামেলা নেই। বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে জমি থেকেই কলা কেটে নিয়ে যায়। এ ছাড়াও হাতিদিয়া বাজহারে কলার বিশাল হাট বসে বৃহস্পতিবার ও রোববার।

নরসিংদীর কলা উন্নত মানের হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামে নরসিংদীর কলার বড় মার্কেট বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নরসিংদী জেলায় উৎপাদিত কলার মধ্যে রয়েছে ওষুধি কলা হিসেবে চিহ্নিত চাম্পা কলা, সবরি কলা, সাগর কলা, হোমাই কলা ও গেরাসুন্দর।

বর্তমানে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে সবরি কলা প্রতি ছড়া প্রকার ভেদে ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত, সাগর কলা ২৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা, চাম্বা কলা ১৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, হোমাই কলা ৩০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আজিজুর রহমান বলেছেন, ‘কলা চাষ বেশ লাভজনক ফসল। তাই কলা চাষ করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন।’