ঢাকা ০৭:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আতঙ্ক দূর করতে সরকারের প্রতি আহবান

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি এখন শান্ত

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি এখন অনেকটা শান্ত। মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির দীর্ঘদিন  ধরে চলছে ব্যাপক সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও বিমান হামলা। চলমান সংঘাতের জেরে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে বেশ কিছুদিন ধরে গোলাগুলির শব্দ শোনা না গেলেও গত ২২ জুন থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে থেমে থেমে মর্টার শেল, বোমা ও বিমান হামলায় প্রকম্পিত হয়েছে সীমান্তবর্তী এলাকাসহ স্থানীয়দের ঘরবাড়ি। গত দুইদিন ধরে ওপার থেকে ভেসে আসছে না বিস্ফোরণের শব্দ।  এই দুইদিন শান্তিতে ঘুমাতে পেরেছে সীমান্ত এলাকার মানুষ। জানা যায়, নুরুল্লাপাড়া, হাইরপাড়া, মুন্নীপাড়া, ফাতনজাপাড়া, ফেরানপ্রু, সিকদারপাড়া, হাঁরিপাড়া, হেতিল্লা পাড়াসহ আরো কয়েকটি গ্রামে আরাকান আর্মি অবস্থান নিয়েছে। এ গ্রামমগুলোতে জান্তা এবং আরাকান আর্মির মধ্যে গত কয়েকদিনে ব্যাপকহারে সংঘর্ষ চললেও এখন থেমে গেছে সংঘাত। কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর হয়তো ফের বেজে উঠবে যুদ্ধের দামামা। ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা সোলতান আহমেদ বলেন, মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর সাথে মগবাগি (সন্ত্রাসী সংগঠন) আরাকান আর্মির চলমান সংঘর্ষে অনেক রোহিঙ্গা হতাহতের পাশাপাশি গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। মিয়ানমারে অবস্থানরত রোহিঙ্গারাও চরম আতঙ্কে ও অনিশ্চিয়তায় দিনাতিপাত করছে। টেকনাফ সীমান্তে বসবাসরত ইমাম শরীফ বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি আজকাল একটু ভালো বা শান্ত মনে হলেও আবার কখন যে ফের উত্তেজনা ছড়াবে না তা বলা মুশকিল। তবে গত দুদিন আগেও টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যং পাড়া, কায়ুকখালী পাড়া, জালিয়া পাড়া, কুলার পাড়া, খাংগার ডেইল, চকবাজার, নাজির পাড়া, মৌলভী পাড়া, সাবরাং মগ পাড়া, আচারবনিয়া, ডেগিল্ল্যা বিল, নয়া পাড়া, শাহপরীর দ্বীপ, জালিয়া পাড়া, উত্তর পাড়া, মিস্ত্রি পাড়া এলাকার লোকজন শুনতে পেয়েছে মিয়ানমারের ওপার থেকে আসা মর্টার শেল, ভারী গোলা ও বোমার শব্দ। শাহপরীর দ্বীপ এলাকার মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, মংডু টাউনশিপ থেকে বিস্ফোরণের শব্দ যখন ভেসে আসসতো তখন ঘরবাড়ি কেঁপে উঠতো। ২৩ জুন রাতে ভারী মর্টার শেল এবং বিমান হামলার ভয়ংকর শব্দ শোনা গেছে। তখন পরিবারের সবাই নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি। আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয় আমাদের। এখন পরিস্থিতি শান্ত। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষের ফলে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে স্বাভাবিক রুটে নৌ যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিশেষ ও জরুরি প্রয়োজনে বিকল্প রুটে সীমিত পরিসরে চলছে নৌ যান সমূহ। নাফ নদী দিয়ে সেন্টমার্টিন যাত্রার সময় নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক পরিস্থিতির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্য ও ওষুধ সামগ্রী পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে সেন্টমার্টিনের মানুষের মনের আতঙ্ক দূর করতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম। সোমবার (২৪ জুন) রাতে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আহবান জানান। সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী তথা বিজিবি, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় সামরিক কর্তৃপক্ষকে আরও জোরদার করতে হবে মানুষের মনের আতঙ্কটি দূর করার জন্য। সমগ্র বিশ্ব এবং সমগ্র জাতি সেন্টমার্টিনের দিকে তাকিয়ে আছে। আশা করি এ সংসদে এ বিষয়ে কেউ না কেউ কিছু বলবেন এবং সেন্টমার্টিনের মানুষের মনের আতঙ্ক দূর করবেন।

আতঙ্ক দূর করতে সরকারের প্রতি আহবান

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি এখন শান্ত

আপডেট সময় ১২:৪১:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি এখন অনেকটা শান্ত। মিয়ানমার জান্তা বাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির দীর্ঘদিন  ধরে চলছে ব্যাপক সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও বিমান হামলা। চলমান সংঘাতের জেরে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে বেশ কিছুদিন ধরে গোলাগুলির শব্দ শোনা না গেলেও গত ২২ জুন থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে থেমে থেমে মর্টার শেল, বোমা ও বিমান হামলায় প্রকম্পিত হয়েছে সীমান্তবর্তী এলাকাসহ স্থানীয়দের ঘরবাড়ি। গত দুইদিন ধরে ওপার থেকে ভেসে আসছে না বিস্ফোরণের শব্দ।  এই দুইদিন শান্তিতে ঘুমাতে পেরেছে সীমান্ত এলাকার মানুষ। জানা যায়, নুরুল্লাপাড়া, হাইরপাড়া, মুন্নীপাড়া, ফাতনজাপাড়া, ফেরানপ্রু, সিকদারপাড়া, হাঁরিপাড়া, হেতিল্লা পাড়াসহ আরো কয়েকটি গ্রামে আরাকান আর্মি অবস্থান নিয়েছে। এ গ্রামমগুলোতে জান্তা এবং আরাকান আর্মির মধ্যে গত কয়েকদিনে ব্যাপকহারে সংঘর্ষ চললেও এখন থেমে গেছে সংঘাত। কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর হয়তো ফের বেজে উঠবে যুদ্ধের দামামা। ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা সোলতান আহমেদ বলেন, মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর সাথে মগবাগি (সন্ত্রাসী সংগঠন) আরাকান আর্মির চলমান সংঘর্ষে অনেক রোহিঙ্গা হতাহতের পাশাপাশি গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। মিয়ানমারে অবস্থানরত রোহিঙ্গারাও চরম আতঙ্কে ও অনিশ্চিয়তায় দিনাতিপাত করছে। টেকনাফ সীমান্তে বসবাসরত ইমাম শরীফ বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি আজকাল একটু ভালো বা শান্ত মনে হলেও আবার কখন যে ফের উত্তেজনা ছড়াবে না তা বলা মুশকিল। তবে গত দুদিন আগেও টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যং পাড়া, কায়ুকখালী পাড়া, জালিয়া পাড়া, কুলার পাড়া, খাংগার ডেইল, চকবাজার, নাজির পাড়া, মৌলভী পাড়া, সাবরাং মগ পাড়া, আচারবনিয়া, ডেগিল্ল্যা বিল, নয়া পাড়া, শাহপরীর দ্বীপ, জালিয়া পাড়া, উত্তর পাড়া, মিস্ত্রি পাড়া এলাকার লোকজন শুনতে পেয়েছে মিয়ানমারের ওপার থেকে আসা মর্টার শেল, ভারী গোলা ও বোমার শব্দ। শাহপরীর দ্বীপ এলাকার মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, মংডু টাউনশিপ থেকে বিস্ফোরণের শব্দ যখন ভেসে আসসতো তখন ঘরবাড়ি কেঁপে উঠতো। ২৩ জুন রাতে ভারী মর্টার শেল এবং বিমান হামলার ভয়ংকর শব্দ শোনা গেছে। তখন পরিবারের সবাই নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি। আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয় আমাদের। এখন পরিস্থিতি শান্ত। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষের ফলে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে স্বাভাবিক রুটে নৌ যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিশেষ ও জরুরি প্রয়োজনে বিকল্প রুটে সীমিত পরিসরে চলছে নৌ যান সমূহ। নাফ নদী দিয়ে সেন্টমার্টিন যাত্রার সময় নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক পরিস্থিতির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্য ও ওষুধ সামগ্রী পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে সেন্টমার্টিনের মানুষের মনের আতঙ্ক দূর করতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম। সোমবার (২৪ জুন) রাতে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আহবান জানান। সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী তথা বিজিবি, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় সামরিক কর্তৃপক্ষকে আরও জোরদার করতে হবে মানুষের মনের আতঙ্কটি দূর করার জন্য। সমগ্র বিশ্ব এবং সমগ্র জাতি সেন্টমার্টিনের দিকে তাকিয়ে আছে। আশা করি এ সংসদে এ বিষয়ে কেউ না কেউ কিছু বলবেন এবং সেন্টমার্টিনের মানুষের মনের আতঙ্ক দূর করবেন।