আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের সামনে গণঅধিকার পরিষদের মানববন্ধন। ছবি : বাংলার সীমান্ত
হত্যা মামলার আসামিদের পাসপোর্ট করে দেওয়ার সঙ্গে জড়িত অসাধু কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত ও বিচারের দাবিতে গণঅধিকার পরিষদ শেরে বাংলানগর থানা মানববন্ধনের আয়োজন করে। বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে গণঅধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি ও পেশাজীবি অধিকার পরিষদের সভাপতি জাফর মাহমুদ বলেন, শুধু শিরিন শারমিন নয়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের গুলি চালিয়েছে এমন অনেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদেরও অবৈধভাবে সাধারণ পাসপোর্ট করে দেওয়া হয়েছে। এর সাথে জড়িত পাসপোর্ট অফিসের কতিপয় দুর্নীতিবাজ অসাধু আওয়ামী দোসর কর্মকর্তারা। শেখ হাসিনার পতনের পর অনেকেই পালিয়ে গেছেন, আবার অনেকেই পালাতে পারেন নাই। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেকের লাল পাসপোর্ট বাতিল করেছেন, তাদের অনেকেই মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অসাধু কর্মকর্তাদের সাধারণ পাসপোর্ট নিয়েছেন। আগামী ২৪ ঘণ্টার ভিতরে এই অপকর্মের সাথে জড়িত কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করতে হবে এবং বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। যেখানে সাধারণ মানুষ পাসপোর্ট করতে গেলে পদে পদে হয়রানি হতে হয়,সেখানে টাকার বিনিময়ে একটা গোষ্ঠী অনিয়মের মাধ্যমে এই সুযোগ নিয়ে থাকে। এর সাথে জড়িত রয়েছে পাসপোর্ট অফিসের একটা সিন্ডিকেট। আমাদের স্পষ্ট ঘোষণা কোনো সিন্ডিকেটের ঠিকানা পাসপোর্ট অফিসে হবে না। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা একটা নতুন দেশ পেয়েছি, ফ্যাসিবাদের সময় যারা গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রিত করতো তারা এখনো গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে। গণমাধ্যম থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিতারিত করতে হবে।
দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম ফাহিম ফাহিম বলেন, জুলাই আগস্টের হত্যা মামলার আসামিদের লুকিয়ে বাসায় গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও চোখের আইরিশ আনা ছাত্র-জনতার রক্তের সাথে বেইমানি করার শামিল। শেখ হাসিনাকে পাসপোর্ট ছাড়া পালিয়ে যেতে সাহায্য করা হয়েছে এবং জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের আসামিদের গোপনে পাসপোর্ট দিয়ে দেশ ত্যাগে সাহায্য করে যাচ্ছে হাসিনার দোসররা। এই ঘৃণিত কাজের সাথে যারা জড়িত তাদের চাকরিচ্যুত করে গ্রেপ্তার ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে, অন্যথায় ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদকে সেফ এক্সিট করে দেওয়া এই পাসপোর্ট অফিস অভিমুখে ঘেরাও কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। এই বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদকে যারাই পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
গণঅধিকার পরিষদ মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, আওয়ামী স্বৈরশাসকের গোপনে দেশত্যাগের গোপন পাসপোর্ট এর ব্যবস্থা করে দিচ্ছে তার বিরুদ্ধে গণধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তরের আওতাধীন শেরে বাংলা থানার প্রতিবাদ সংগ্রামের মাধ্যমে পাসপোর্ট সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। এবং ভবিষ্যতে যে কোনো পর্যায়ে পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে কোন বৈষম্যের বা সিন্ডিকেট না হয় অধিকার পরিষদ জনগণের পক্ষে কাজ করে যাবে।
মানববন্ধনে সঞ্চালনায় করেন গণঅধিকার পরিষদ,ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ,মহানগর উত্তরের সহ সভাপতি রাকিবুল হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইমরান, শেরে বাংলা নগর থানার আহবায়ক জিল্লুর রহমান, সদস্য সচিব আখতারুজ্জামান প্রমুখ।