ঢাকা ০২:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে তলিয়ে গেছে এক হাজার একর পাকা ধান

উখিয়া মাছকারিয়া কৃষি প্রধধান এলাকা থেকে তোলা ছবি: বাংলার সীমান্ত 


কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার মাছকারিয়া এলাকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নেমে আসা বর্জ্য ও প্লাস্টিক ময়লায় তলিয়ে গেছে দুই হাজার একর চাষযোগ্য জমির মধ্যে এক হাজার একর পাকা ধান। পাহাড়ি ঢলের সাথে আসা বৃষ্টির পানির স্রোতে এসব জমি এখন পানির নিচে। ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। স্থানীয় কৃষক মো. গফুর কোম্পানি জানান, “দুই হাজার একর জমিতে আমরা ধান চাষ করেছি। কিন্তু রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্লাস্টিক, পলিথিন ও বর্জ্যস্রোতে এক হাজার একর জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে। ধান তোলার আগেই সব শেষ।কৃষকদের দুর্দশার চিত্র দেখতে সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে মাছকারিয়া এলাকা পরিদর্শনে যান উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী। তার সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. ইবনে মায়াজ প্রামাণিক, রাজাপালং ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল হক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিকদার, সাংবাদিকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। স্থানীয় কৃষকরা জানান, প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নেমে আসা বর্জ্য ও প্লাস্টিক উপকরণগুলো পাশের ফসলি জমিতে এসে জমা হয়, যার ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় এবং ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও উখিয়া-টেকনাফ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী বলেন, “এই অঞ্চলের কৃষকদের রক্ষায় দ্রুত টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে চীন থেকে উন্নত প্রযুক্তি এনে স্থায়ী ড্রেনেজ ব্যবস্থা করতে হবে যেন কৃষকের এক ইঞ্চি জমিও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।তার ছোট ভাই ও উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, “রোহিঙ্গা শিবির থেকে আসা বর্জ্যের কারণে বিশাল ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। খাল খনন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও গাইডওয়াল নির্মাণ এখনই শুরু করতে হবে, না হলে সামনের বর্ষায় আরও ভয়াবহ ক্ষতি হবে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, রোহিঙ্গাদের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও স্থানীয়দের জন্য বরাদ্দ থাকা ২৫ শতাংশ অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। কৃষক গফুর বলেন, “এই টাকা কোথায় যায়? কেন আজ স্থানীয়রাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত? এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, “রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত রিফিউজি রিলিফ অ্যান্ড রেপাট্রিয়েশন কমিশনার (RRRC) কার্যালয় ও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করবে। কৃষকদের যেন ভবিষ্যতে আর ক্ষতিগ্রস্ত হতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে দ্রুত টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নেয়া হবে।কৃষকদের ক্ষতির পূরণ ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে তলিয়ে গেছে এক হাজার একর পাকা ধান

আপডেট সময় ০১:১১:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

উখিয়া মাছকারিয়া কৃষি প্রধধান এলাকা থেকে তোলা ছবি: বাংলার সীমান্ত 


কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার মাছকারিয়া এলাকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নেমে আসা বর্জ্য ও প্লাস্টিক ময়লায় তলিয়ে গেছে দুই হাজার একর চাষযোগ্য জমির মধ্যে এক হাজার একর পাকা ধান। পাহাড়ি ঢলের সাথে আসা বৃষ্টির পানির স্রোতে এসব জমি এখন পানির নিচে। ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। স্থানীয় কৃষক মো. গফুর কোম্পানি জানান, “দুই হাজার একর জমিতে আমরা ধান চাষ করেছি। কিন্তু রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্লাস্টিক, পলিথিন ও বর্জ্যস্রোতে এক হাজার একর জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে। ধান তোলার আগেই সব শেষ।কৃষকদের দুর্দশার চিত্র দেখতে সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে মাছকারিয়া এলাকা পরিদর্শনে যান উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী। তার সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. ইবনে মায়াজ প্রামাণিক, রাজাপালং ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল হক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিকদার, সাংবাদিকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। স্থানীয় কৃষকরা জানান, প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নেমে আসা বর্জ্য ও প্লাস্টিক উপকরণগুলো পাশের ফসলি জমিতে এসে জমা হয়, যার ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় এবং ফসল নষ্ট হয়ে যায়। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও উখিয়া-টেকনাফ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী বলেন, “এই অঞ্চলের কৃষকদের রক্ষায় দ্রুত টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে চীন থেকে উন্নত প্রযুক্তি এনে স্থায়ী ড্রেনেজ ব্যবস্থা করতে হবে যেন কৃষকের এক ইঞ্চি জমিও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।তার ছোট ভাই ও উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, “রোহিঙ্গা শিবির থেকে আসা বর্জ্যের কারণে বিশাল ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। খাল খনন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও গাইডওয়াল নির্মাণ এখনই শুরু করতে হবে, না হলে সামনের বর্ষায় আরও ভয়াবহ ক্ষতি হবে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, রোহিঙ্গাদের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও স্থানীয়দের জন্য বরাদ্দ থাকা ২৫ শতাংশ অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। কৃষক গফুর বলেন, “এই টাকা কোথায় যায়? কেন আজ স্থানীয়রাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত? এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, “রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত রিফিউজি রিলিফ অ্যান্ড রেপাট্রিয়েশন কমিশনার (RRRC) কার্যালয় ও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করবে। কৃষকদের যেন ভবিষ্যতে আর ক্ষতিগ্রস্ত হতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে দ্রুত টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নেয়া হবে।কৃষকদের ক্ষতির পূরণ ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল।