ঢাকা ০৪:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মে দিবস উপলক্ষে..

তাজমান হাসপাতালের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত


দুনিয়ার মজদুর এক হও” আজ ১লা মে মহান মে দিবস ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালন উপলক্ষে উখিয়ার পালংখালী তাজমান হাসপাতালের হলরুমে সন্ধায় ৬ টায়   আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছি‌লেন তাজমান হাসপাতালের চেয়ারম্যান আবুল আলা রোমান। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তাজামান হাসপাতালের এমডি মুজাহিদ রায়হান, তাজমান হাসপাতালের পরিচালক প্রশাসন মারজান চৌধুরী, তাজমান হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হাফেজ আব্দুল কাদের, তাজমান হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার নুরুল হাসান, তাজমান হাসপাতালের এডমিন মিজানুর রহমান, এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের অন্যান্য সদসবৃন্দ, স্টাফবৃন্দসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন তাজমান হাসপাতালের প্রধান উপদেষ্টা আলহাজ্ব মাওলানা কবির আহম্মেদ অনুষ্ঠান পরিচালনা ম্যানেজার গিয়াস উদ্দিন।আলোচনা পর্বে হাসপাতালের চেয়ারম্যান আবুল আলা রোমান অতিথিদের সামনে শ্রমিকদের বেশ কিছু সমস্যার কথা তূলে ধরে বক্তব্য রাখেন ।১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা উপযুক্ত মজুরি আর দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। কল-কারখানার সীমাহনি পরিশ্রম তখন গিলে খাচ্ছিল শ্রমিকের গোটা জীবন। অসহনীয় পরিবেশে তখন প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা কাজ করতে হতো তাদের সপ্তাহজুড়ে অমানসিক পরিশ্রম করে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য তখন একেবারে ভেঙে যাচ্ছিল। শ্রমজীবী শিশুরা তো হয়ে পড়েছিল একেবারেই কঙ্কালসার। তখন দাবি উঠেছিল, কল-কারখানার এই অমানসিক পরিশ্রম শ্রমিকের গোটা জীবন কোনোভাবেই কিনে নিতে পারে না। তখন দিনে ৮ ঘণ্টা শ্রমের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলনের সময় ওই বছরের ১-লা মে শ্রমিকরা ধর্মঘট আহ্বান করে। প্রায় তিন লাখ মেহনতি শ্রমিক ওই সমাবেশে অংশ নেয়। আন্দোলনরত ক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের রুখতে গিয়ে একসময় পুলিশ বাহিনী শ্রমিকদের মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে তৎক্ষণাৎ পুলিশের গুলিতে ১১ জন নিরস্ত্র শ্রমিক নিহত হন, আহত ও গ্রেফতার হন আরো অনেক শ্রমিক। পরবর্তীতে প্রহসনমূলক বিচারের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের মধ্য থেকে ছয়জনকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার অপরাধে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। কারাগারে বন্দিদশায় এক শ্রমিক নেতা আত্নহননও করেন। এতে বিক্ষোভ আরো প্রকট আকারে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। ১৮৮৯ সালের ১৪ই জুলাই ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে ১-লা মে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী বছর অর্থাৎ ১৮৯০ সাল থেকে ১-মে বিশ্বব্যাপী পালন হয়ে আসছে ‘মে দিবস’ বা ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ হিসেবে। তবে এই ইতিহাসের মধ্যেই দিবসটির তাৎপর্য ও মাহাত্মা লুকিয়ে আছে। সন্দেহ নেই বিশ্বজুড়ে শ্রমিক দিবস পালনের সূচনা থেকেই শ্রমিকদের প্রতি আলাদা একটি মর্যাদা স্থাপিত হয়েছে। বলা যায় এরপর থেকে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসতে শুরু করে বিশ্বজুড়ে শ্রমব্যবস্থায়। শ্রেণিবৈষম্যের বেড়াজালে যে শ্রমিকরা একদিন শোষিত ছিল তারাই এক সময় শোষণের নিগড় ভেঙে বেরিয়ে আসতে সমর্থ হয়।আসলে শ্রমিক দিবস পালন শুরু হওয়ার পর থেকে পুঁজিবাদের ওপর একটা সাংঘাতিক ধাক্কা আসে। এর ফলে অবৈধ পুঁজিপতিদের আগ্রাসী মনোভাব থেকে রেহাই পায় শ্রমিকরা। শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে শুরু করে। শ্রমিকদের সঙ্গে মালিক পক্ষের উচুঁনিচু ভেদাভেদও তখন অনেকটাই দূর হতে শুরু করে। উল্লেখ্য, বর্তমানে মে দিবস সারা বিশ্বের শ্রমিকদের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে এবং বিশ্বের সব শ্রমিকের নিজস্ব স্বার্থসংশ্লিষ্ট আন্দোলনের প্রেরণা হিসেবে একটি কার্যকর ভূমিকা রেখে চলেছে। সমতা, ন্যায্য মজুরি, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের জন্য চলমান লড়াই বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও এই শ্রমিক দিবসের মাহাত্মা বিশেষ অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছে। বিশ্বজুড়ে পালিত আন্তর্জাতিক এই মে দিবসের প্রেরণা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং সেই সংগ্রামে শ্রমিক আন্দোলনের ভূমিকার সঙ্গেও বিশেষ প্রেরণাদায়ক প্রেক্ষাপট হিসেবে কাজ করেছে বলা যায়।

মে দিবস উপলক্ষে..

তাজমান হাসপাতালের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় ১০:৪৩:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

দুনিয়ার মজদুর এক হও” আজ ১লা মে মহান মে দিবস ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালন উপলক্ষে উখিয়ার পালংখালী তাজমান হাসপাতালের হলরুমে সন্ধায় ৬ টায়   আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছি‌লেন তাজমান হাসপাতালের চেয়ারম্যান আবুল আলা রোমান। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তাজামান হাসপাতালের এমডি মুজাহিদ রায়হান, তাজমান হাসপাতালের পরিচালক প্রশাসন মারজান চৌধুরী, তাজমান হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হাফেজ আব্দুল কাদের, তাজমান হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার নুরুল হাসান, তাজমান হাসপাতালের এডমিন মিজানুর রহমান, এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের অন্যান্য সদসবৃন্দ, স্টাফবৃন্দসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন তাজমান হাসপাতালের প্রধান উপদেষ্টা আলহাজ্ব মাওলানা কবির আহম্মেদ অনুষ্ঠান পরিচালনা ম্যানেজার গিয়াস উদ্দিন।আলোচনা পর্বে হাসপাতালের চেয়ারম্যান আবুল আলা রোমান অতিথিদের সামনে শ্রমিকদের বেশ কিছু সমস্যার কথা তূলে ধরে বক্তব্য রাখেন ।১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা উপযুক্ত মজুরি আর দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। কল-কারখানার সীমাহনি পরিশ্রম তখন গিলে খাচ্ছিল শ্রমিকের গোটা জীবন। অসহনীয় পরিবেশে তখন প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা কাজ করতে হতো তাদের সপ্তাহজুড়ে অমানসিক পরিশ্রম করে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য তখন একেবারে ভেঙে যাচ্ছিল। শ্রমজীবী শিশুরা তো হয়ে পড়েছিল একেবারেই কঙ্কালসার। তখন দাবি উঠেছিল, কল-কারখানার এই অমানসিক পরিশ্রম শ্রমিকের গোটা জীবন কোনোভাবেই কিনে নিতে পারে না। তখন দিনে ৮ ঘণ্টা শ্রমের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলনের সময় ওই বছরের ১-লা মে শ্রমিকরা ধর্মঘট আহ্বান করে। প্রায় তিন লাখ মেহনতি শ্রমিক ওই সমাবেশে অংশ নেয়। আন্দোলনরত ক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের রুখতে গিয়ে একসময় পুলিশ বাহিনী শ্রমিকদের মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে তৎক্ষণাৎ পুলিশের গুলিতে ১১ জন নিরস্ত্র শ্রমিক নিহত হন, আহত ও গ্রেফতার হন আরো অনেক শ্রমিক। পরবর্তীতে প্রহসনমূলক বিচারের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের মধ্য থেকে ছয়জনকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার অপরাধে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। কারাগারে বন্দিদশায় এক শ্রমিক নেতা আত্নহননও করেন। এতে বিক্ষোভ আরো প্রকট আকারে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। ১৮৮৯ সালের ১৪ই জুলাই ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে ১-লা মে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরবর্তী বছর অর্থাৎ ১৮৯০ সাল থেকে ১-মে বিশ্বব্যাপী পালন হয়ে আসছে ‘মে দিবস’ বা ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’ হিসেবে। তবে এই ইতিহাসের মধ্যেই দিবসটির তাৎপর্য ও মাহাত্মা লুকিয়ে আছে। সন্দেহ নেই বিশ্বজুড়ে শ্রমিক দিবস পালনের সূচনা থেকেই শ্রমিকদের প্রতি আলাদা একটি মর্যাদা স্থাপিত হয়েছে। বলা যায় এরপর থেকে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসতে শুরু করে বিশ্বজুড়ে শ্রমব্যবস্থায়। শ্রেণিবৈষম্যের বেড়াজালে যে শ্রমিকরা একদিন শোষিত ছিল তারাই এক সময় শোষণের নিগড় ভেঙে বেরিয়ে আসতে সমর্থ হয়।আসলে শ্রমিক দিবস পালন শুরু হওয়ার পর থেকে পুঁজিবাদের ওপর একটা সাংঘাতিক ধাক্কা আসে। এর ফলে অবৈধ পুঁজিপতিদের আগ্রাসী মনোভাব থেকে রেহাই পায় শ্রমিকরা। শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে শুরু করে। শ্রমিকদের সঙ্গে মালিক পক্ষের উচুঁনিচু ভেদাভেদও তখন অনেকটাই দূর হতে শুরু করে। উল্লেখ্য, বর্তমানে মে দিবস সারা বিশ্বের শ্রমিকদের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে এবং বিশ্বের সব শ্রমিকের নিজস্ব স্বার্থসংশ্লিষ্ট আন্দোলনের প্রেরণা হিসেবে একটি কার্যকর ভূমিকা রেখে চলেছে। সমতা, ন্যায্য মজুরি, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের জন্য চলমান লড়াই বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও এই শ্রমিক দিবসের মাহাত্মা বিশেষ অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছে। বিশ্বজুড়ে পালিত আন্তর্জাতিক এই মে দিবসের প্রেরণা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং সেই সংগ্রামে শ্রমিক আন্দোলনের ভূমিকার সঙ্গেও বিশেষ প্রেরণাদায়ক প্রেক্ষাপট হিসেবে কাজ করেছে বলা যায়।