কক্সবাজারের চকরিয়ার পৌর এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর গণমিছিল। ছবি বাংলার সীমান্ত
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌর শহরে স্মরণকালের বড় গণমিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী। সোমবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচি ‘জুলাই গণ-আন্দোলনের’ এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত হলেও এটিকে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কক্সবাজার-১ (চকরিয়া–পেকুয়া) আসনে জামায়াতের ‘শক্তি প্রদর্শন’ হিসেবে দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন কক্সবাজার-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ও কক্সবাজার শহর জামায়াতের আমির আবদুল্লাহ আল ফারুক। তিনি হাত নেড়ে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে অভিবাদন জানান।
এ আসনে বিএনপি থেকে নির্বাচন করে আসছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি দুবার এবং তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে চকরিয়া বাস টার্মিনাল থেকে মিছিল শুরু হয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চিরিঙ্গা সোসাইটি এলাকা প্রদক্ষিণ করে জনতা শপিং সেন্টার মাঠে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তায় জনস্রোতের কারণে মহাসড়কে যানজট তৈরি হয়। স্থানীয় জামায়াত নেতারা দাবি করেন, এতে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ অংশ নেন।
সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চকরিয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল বশর। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী।
সমাবেশে নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে একশ্রেণির মানুষ চাঁদাবাজি শুরু করেছে। এর দায় কোনো নির্দিষ্ট দলের ওপর চাপাতে চাই না। তবে জনগণ আগামী নির্বাচনে এসব চাঁদাবাজদের প্রত্যাখ্যান করবে।
জেলা আমির বলেন, দেশে এখন একটি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে রয়েছে, অথচ প্রশাসন বিভিন্ন দলকে বৈষম্যমূলক সুবিধা দিচ্ছে। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, আমরা কারও রক্তচক্ষুকে ভয় করি না। বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। এ সময় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে আবদুল্লাহ আল ফারুককে কক্সবাজার-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। জনতা হাততালি দিয়ে ফারুকের প্রতি সমর্থন জানান। আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, জুলাই আন্দোলনের মূল দাবি ছিল ন্যায়ভিত্তিক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠন। তবে তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। তিনি আরও বলেন, ইসলামি আদর্শ ছাড়া দুর্নীতিমুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র সম্ভব নয়। আওয়ামী সরকার বিদায়ের পর দেশে এখনো ফ্যাসিবাদী আচরণ, দুর্নীতি ও বৈষম্য চলমান।সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য আক্তার আহমদ, জেলা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মীর মোহাম্মদ আবু তালহা, চকরিয়া পৌর জামায়াতের আমির আরিফুল কবির, মাতামুহুরি সাংগঠনিক উপজেলার আমির মাওলানা ফরিদুল আলম ও চকরিয়া উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান চৌধুরী।